ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে দীর্ঘতম সেতুটি হলো ভারতের আসামের ভূপেন হাজারিকা সেতু। ব্রহ্মপুত্রের শাখা লোহিত নদীর ওপর নির্মিত ৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের সঙ্গে অরুণাচলকে যুক্ত করেছে।
ভারতে গঙ্গা নামে পরিচিত আর বাংলাদেশে পদ্মা নাম ধারণ করা নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এত দিন পদ্মা-গঙ্গার ওপর নির্মিত দীর্ঘতম সেতু ছিল ভারতের বিহারের মহাত্মা গান্ধী সেতু। ৫ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কসেতুটি বিহারের পাটনার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলীয় হাজিপুরকে যুক্ত করেছে। তবে পদ্মা সেতু গঙ্গা-পদ্মার ওপর দীর্ঘতম সেতুর তকমা খুব বেশি দিন ধরে রাখতে পারবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, বিহারেই গঙ্গার ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে ৯ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কাচ্চি দরগা-বিদুপুর সেতু। ২০২১ সালের নভেম্বরে ছয় লেনের সড়কসেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
পদ্মা সেতুর বিশেষত্ব হলো, এটি দ্বিতল। নিচের অংশে ছুটবে ট্রেন, ওপর দিয়ে চলবে গাড়ি। বঙ্গবন্ধু সেতুও সড়ক ও রেলসেতু। তবে এই সেতুতে সড়কপথের পাশ দিয়েই চলে গেছে রেললাইন। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু ১৯৯৮ সালের জুনে উদ্বোধন করা হয়।
বর্তমানে বিশ্বের দীর্ঘতম সেতু হলো চীনের ‘দানিয়াং-কুনশান গ্র্যান্ড ব্রিজ’। বিবিসি, সিএনএন ও চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার তথ্যানুসারে, ১৬৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেলসেতু চীনের সাংহাইয়ের সঙ্গে জিয়াংশু প্রদেশের নানজিং এলাকাকে যুক্ত করেছে। এর কিছু অংশ গেছে পানির ওপর দিয়ে, বাকিটা স্থলভাগের ওপর। ১০ হাজার কর্মীর নিরলস প্রচেষ্টায় মাত্র চার বছরে সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। ২০১০ সালে নির্মাণ শেষ হওয়ার পর ২০১১ সালে এটি উদ্বোধন করা হয়। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ এই সেতুকে যেকোনো ক্যাটাগরিতে (শ্রেণিতে) বিশ্বের দীর্ঘতম সেতু হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। চীনের উচ্চগতির ট্রেন চলাচল করে দানিয়াং-কুনশান গ্র্যান্ড ব্রিজের ওপর দিয়ে।
প্রকৌশলীরা বলছেন, এক্সপ্রেসওয়ে আর সেতু—একই জিনিস, তা স্থলভাগের ওপর দিয়েই যাক কিংবা জলভাগের ওপর দিয়ে। সে হিসেবে চীনের দানিয়াং-কুনশান গ্র্যান্ড ব্রিজ বিশ্বের দীর্ঘতম সেতু। তবে সড়ক ও রেল—দুটো একসঙ্গে চিন্তা করলে পদ্মা সেতু দৈর্ঘ্যের দিক থেকে বিশ্বের সেতুগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতেই থাকবে। তবে প্রথম ১০টির মধ্যে থাকবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিএনএনের তথ্যমতে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতুটিও রেলসেতু। ১৫৭ কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের এই সেতু তাইওয়ানে। এর ওপর দিয়েও উচ্চগতির ট্রেন ছুটে চলে।