স্টিলের সব স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মার দুই পার মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা যুক্ত হয়েছে। পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো। এখন সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন ও ট্রেন চলাচলের পথ তৈরির কাজ আরও জোরেশোরে এগিয়ে নিতে চায় সেতু বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়। এসব কাজ সম্পন্ন হলেই চালু হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতু চালু নিয়ে এখন পর্যন্ত সম্ভাব্য চারটি দিনক্ষণ জানা গেছে।
পদ্মা সেতু চালুর দিনক্ষণের বিষয়টি কিছু আছে নথিতে, আবার সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকেও এ নিয়ে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। তবে ঠিক কবে সেতুটি চালু হবে, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। পদ্মা সেতুর সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাবে (আরডিপিপি) সেতু চালু বিষয়ে বলা আছে, পদ্মা সেতুর প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২১ সালের জুনে। তবে প্রকল্প সূত্র বলছে, নকশা সংশোধনসহ নানা কারণে কাজের গতি কমে যাওয়ায় এ সময়ের মধ্যে সেতু চালু করা সম্ভব নয়। এই ডিপিপি সংশোধন করে সময় বাড়ানোর প্রস্তুতি আছে।
এ পরিস্থিতিতে আগামী বছর ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সেতুটি চালু করার নতুন কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে সেতু বিভাগ। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও একাধিকবার আনুষ্ঠানিক বক্তৃতায় ১৬ ডিসেম্বর সেতু চালুর ঘোষণা দিয়েছেন।
তবে আগামী বছর ১৬ ডিসেম্বর সেতু চালুর তারিখটি নির্ধারিত না–ও থাকতে পারে বলে মনে করছে সেতু বিভাগ। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ২০২২ সালের ২৬ মার্চ সেতুটি চালু করার বিষয়ে আলোচনা আছে। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খোন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু করা যাবে। তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার আগে দীর্ঘদিন সেতু বিভাগের সচিব ছিলেন।
এর বাইরে পদ্মা সেতু চালুর বিষয়ে মূল সেতুর ঠিকাদার চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির (এমবিইসি) আবার আরেকটা চাওয়া আছে। তারা বলেছে, ২০২২ সালের ২৩ এপ্রিলের মধ্যে মূল সেতুর কাজ (সড়ক ও রেলপথসহ) শেষ করতে পারবে। সে অনুযায়ী সেতু বিভাগের কাছে সময় বাড়ানোর আরজি দিয়েছে তারা। যদিও এ বিষয়ে এখনো সেতু বিভাগ কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।
পদ্মা সেতু চালুর দিনক্ষণ বিষয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান এম শামীম জেড বসুনিয়া গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেছেন, দেড় বছরের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু করা সম্ভব হবে।